একুশ শতকে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্তরে স্তরে এর অনুন্নত জীবনধারাকে বদলে বাংলাদেশের সমাজকে জ্ঞান ভিত্তিক সমাজে রূপান্তর করা। কার্যত এ দেশের মানুষের জীবনযাপন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবস্থাপনা, কর্মপদ্ধতি, শিল্প-বাণিজ্য ও উৎপাদন, অর্থনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা সহ সকল স্তরের সেবাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা।
‘মাইগভ’ নামক ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবাসমূহকে একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে প্রদান করা হয়। সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে প্রচলিত ডিজিটাইজেশনের পাশাপাশি র্যাপিড ডিজিটাইজেশনের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে ডিজিটাল রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে ইতোমধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রামের উদ্যোগে 'আমার সরকার বা মাইগভ প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে। যা ব্যবহার করে র্যাপিড ডিজিটাইজেশন অথবা দ্রুততম সময়ে সরকারি সেবা সমূহকে ডিজিটাইজেশনের কাজ চলমান রয়েছে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ধীরে ধীরে সকল মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সার্ভিসগুলোকে মাইগভ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করা হবে, যাতে জনগণ সরকারের সকল সেবা একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে গ্রহণ করতে পারেন। কম সময়ে স্বল্প খরচে দ্রুততার সাথে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন যেকোন ধরনের ডকুমেন্ট ও পেমেন্ট অনলাইনে প্রদান করাও এর মাধ্যমে সম্ভব। এইসব সেবাগুলোর সাথে ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সেবা গ্রহীতার আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
আমার সরকার বা মাইগভ প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে এদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার বেশ কিছু মৌলিক সমস্যার সমাধান রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে-
মাইগভ এ প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দের জন্য সকল সরকারী ই-সার্ভিস প্ল্যাটফর্মে একক লগইন এর ব্যবস্থা রয়েছে।
সরকারের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সকল সিস্টেমের মধ্যে আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে মাইগভ টেকনোলজী হাবের মাধ্যমে।
মাইগভ এর মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন ধরনের নতুন সফটওয়্যার তৈরি ছাড়াই সেবাসমূহকে নাগরিকের জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে
মন্ত্রণালয়/অফিসের প্রয়োজনের ভিত্তিতে মাই গভ ইমপ্লিমেন্টেশন পার্টনারবৃন্দ বিভিন্ন কাস্টমাইজড এক্সেস পয়েন্ট এবং সাপোর্ট সার্ভিস এর সুবিধা প্রদানে সক্ষম।
নির্দিষ্ট টেকনোলোজি দক্ষতার উপর নির্ভরতা অনেকাংশে হ্রাসের সূচনা ঘটেছে মাই গভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।
মাইগভ এ সেবা গ্রহীতা/ নাগরিকদের প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ:
মাইগভ প্ল্যাটফর্ম পাঁচ ধরনের সার্ভিস এক্সেস চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকদের সর্বোচ্চ এক্সেসিবিলিটি নিশ্চিত করে থাকে।
পাঁচ ধরনের সার্ভিস এক্সেস চ্যানেলের মধ্যে রয়েছে:
মাইগভ ওয়েব (mygov.bd): মাইগভ ওয়েবের মাধ্যমে সিটিজেন ল্যাপটপ, মোবাইল, ট্যাবলেট যে কোন ডিভাইস ব্যবহার করে সেবার আবেদন, সেবা সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান করতে পারেন।
মাইগভ অ্যাপে: মাইগভ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাগণ ভাবে সেবার আবেদন, সেবার ট্র্যাকিং, পেমেন্ট প্রভৃতি কার্যাবলি সম্পন্ন করতে পারেন।
৩৩৩ কল সেন্টারঃ সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীদের অ্যাক্সেস প্রদান করতে এবং পাশাপাশি রোমিংয়ের সময় ইন্টারনেটের বাইরে থাকা নাগরিকদের সহায়তা প্রদানে 333 কল সেন্টার ভয়েস এসিস্ট্যান্ট হিসেবে সার্ভিসের তথ্য, এপ্লিকেশন সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা এবং এপ্লিকেশন এর স্ট্যাটাসের মত গুরুত্বপূর্ন তথ্য জানিয়ে সহযোগিতা করে থাকে।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারঃ প্রযুক্তির দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা গ্রামীন নাগরিক দের সহোযোগিতার উদ্দেশ্যে সারাদেশে ৪৫০০+ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে যারা অ্যাক্সেস পয়েন্ট হিসাবে মাইগভ প্ল্যাটফর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সেবাগ্রহীতাগণ ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তার সহায়তায় সার্ভিসের এপ্লিকেশন, পেমেন্ ইত্যাদি করতে পারেন।
সেবাপ্রদানকারীর নিজস্ব ডিজিটাল সিস্টেমঃ সেবা প্রদানকারী সংস্থা সমূহের নিজস্ব ডিজিটাল সিস্টেম সমূহের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাগণ কোন মাইগভ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সেবা গ্রহন করতে পারবেন।
সর্বোপরি, মাইগভ প্লাটফরমটি সেবার আবেদন থেকে শুরু করে অনলাইন পেমেন্ট, সার্ভিস ট্র্যাকিং, সার্ভিস ডেলিভারি, সার্ভিস হিস্ট্রি অনুসন্ধান, সার্ভিস সংক্রান্ত অভিযোগ ইত্যাদি সকল প্রকার সুবিধা ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাম ও শহর নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করে।